বিজ্ঞান সাধক আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় | Acharya Prafulla Chandra Roy | বেঙ্গল কেমিক্যাল প্রতিষ্ঠানের স্রষ্টা | আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বাণী | প্রফুল্ল চন্দ্র রায় অবদান | প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের উক্তি | কে কেন বেঙ্গল কেমিক্যাল প্রতিষ্ঠা করেন | আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় প্রবন্ধ রচনা | প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বই |

বিজ্ঞান সাধক আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়

  • ভূমিকা
  • আচার্যের জীবনী প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের আবিষ্কার
  • প্রফুল্লচন্ত্রের অন্যান্য কাজ প্রফুল্লচন্দ্রের প্রকাশিত গ্রন্থ
  • স্বীকৃতি  পুরস্কার
  • উপসংহার
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় | Acharya Prafulla Chandra Roy
Pic Source: Google

ভূমিকা : আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক দুজনেরই জন্ম একই বছরে অর্থাৎ ১৮৬১ সালে, তাদের জন্মের একশত পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে তাদের চিন্তাভাবনা, কর্ম আদর্শ নিয়ে চিন্তাভাবনা, আলাপ আলােচনা, সভা-সমাবেশ শুরু হয়েছে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু প্রফুল্লচন্দ্র রায় পৃথক পৃথক ভাবে লব্ধপ্রতিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন

আচার্যের জীবনী : বাংলাদেশের যশােহরে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জন্ম হয়১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে এন্ট্রান্স পাশ করে কলকাতার মেট্রোপলিটন পরে প্রেসিডেন্সিতে পড়াশােনা করেনতিনি বি. . পরীক্ষার আগে গিলক্রাইস্ট বৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে বিলাত যানসেখানে প্রথমে বি. এসসি পাস করেন এবং পরে ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে রসায়ন শাস্ত্রে মৌলিক গবেষণার জন্য ডি, এসসি ডিগ্রি লাভ করেন১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে দেশে ফিরে প্রথমে সহকারী অধ্যাপক পরে প্রধান অধ্যাপক হন (১৯১১)। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ওই পদ থেকে অবসর নিয়ে সায়েন্স কলেজে রসায়ন বিভাগে পালিত অধ্যাপক হন এবং ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ওই পদে আসীন থাকেন১৯০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠা করেন১৯২৪-৪৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি যাদবপুর জাতীয় বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেনইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সােসাইটি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন

আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় | Acharya Prafulla Chandra Roy
Pic Source: Google

প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের আবিষ্কার : প্রফুল্লচন্দ্র তার নানা আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেনতার প্রধান লক্ষ্য ছিল মৌল আবিষ্কার করে রসায়ন জগতে অবিস্মরণীয় হওয়ারসায়ন জগতে দুটো অস্থায়ী জিনিস একত্রিত হয়ে যে একটা স্থায়ী মৌল তৈরি হতে পারে এমন বিশ্বাস গবেষকের মধ্যে ছিল নাপ্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রমাণ করলেন পারদের সঙ্গে নাইট্রিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় কীভাবে মারকিউরাম নাইট্রেট তৈরি হতে পারেতবে তিনি নাইট্রেট আবিষ্কারে ব্যর্থ হলেও সােনা প্লাটিনাম গােত্রের বিশেষ বিশেষ যৌগ প্রস্তুতে তার সাফল্য আধুনিক রসায়নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছাড়াও তিনি অ্যামােনিয়াম নাইট্রেট, সালফার গঠিত জৈব পদার্থ প্ল্যাটিনাম, ইরিডিয়াম কিংবা সােনা সংবলিত জৈব রাসায়নিক আবিষ্কার করেন ছাড়া ঘি, মাখন, তেলের রাসায়নিক বিশ্লেষণ নিয়েও গবেষণা করেছেন প্রফুল্লচন্দ্র

প্রফুল্লচন্দ্রের অন্যান্য কাজ : প্রফুল্লচন্দ্র দেশপ্রেমিকবিজ্ঞানের মাধ্যমে দেশের উন্নতিসাধন করা তথা পরাধীন ভারতীয়দের আত্মমর্যাদা বাড়ানাে ছিল তার উদ্দেশ্যবাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্যপ্রফুল্লচন্দ্র চিরকুমার ছিলেন এবং অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেনস্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী বীরদের প্রতি ছিল তাঁর গভীর সহানুভূতিসব ধরনের জাতীয় শিক্ষা শিল্পোদ্যোগের প্রতি অকৃপণ সহায়তা এবং অর্জিত অর্থ মানব কল্যাণে অকাতরে বিতরণ করা তাকে দেশবাসীর কাছে বিশিষ্ট করে তুলেছে

আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় | Acharya Prafulla Chandra Roy
Pic Source: Google

প্রফুল্লচন্দ্রের প্রকাশিত গ্রন্থ : তার আত্মচরিত গ্রন্থটির নাম 'Life and Experience of a Bengali Chemist” এবং ইংরেজি বাংলায় রচিত বহু গ্রন্থ তাঁর সাহিত্য সাধনার পরিচয় বহন করে তার আত্মচরিত ইংরেজিতে লেখা হলেও বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং পাঁচ বছরের মধ্যে আত্মচরিতের বাংলা সংস্করণ প্রকাশিত হয় আত্মচরিতের অর্থ বাঙালির জীবন দর্পণ ছাড়া বাংলায় লেখাবাঙালির মস্তিষ্ক তার অপব্যবহার এবং অন্নসমস্যায় বাঙালির পরাজয় তাহার প্রতিকারতার অন্যতম উল্লেখযােগ্য প্রবন্ধ তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ "History of Hindu Chemistry" দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয় চরক, সুশ্রত, বাণভট্ট, বৃন্দ, চক্রপাণি কিংবা নাগার্জুন যে দীর্ঘ বর্ণনা দিয়েছেন সেই সব অজানা তথ্যকে প্রফুল্লচন্দ্র দুখণ্ডে প্রকাশ করেছিলেন আর এটিই তার দীর্ঘ গবেষণা সমৃদ্ধ রচনা

স্বীকৃতি পুরস্কার : ১৯২১ সালে Non-Cooperaion Movement-এর সময় গান্ধিজির খদ্দর প্রচারে প্রফুল্লচন্দ্র রায় বিশেষ ভূমিকা নেন ব্রিটিশ সরকারের সি আই নাইট উপাধি ছাড়া দেশি বিদেশি চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডিগ্রি তিনি লাভ করেন অপরদিকে সিডনির বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক সদস্যরূপে গ্রহণ করেন ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহিতে অনুষ্ঠিত ভারতীয় বিজ্ঞান সভার তিনি মূল সভাপতি হন

উপসংহার : ব্রিটিশরা চিরকালই ভারতীয়দের হেয় দৃষ্টিতে দেখে এসেছে কিন্তু সেই সময় প্রফুল্লচন্দ্র তার মেধা গবেষণা দ্বারা প্রমাণ করেছিলেন, ভারতবাসীরাও পিছিয়ে থাকার নয় শুধু তাই নয় রসায়ন শিক্ষার প্রসারে তার উদ্যোগী ভূমিকা স্মরণীয় তিনি আজীবন দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়ােজিত করেছিলেন

Post a Comment

0 Comments