স্বামী বিবেকানন্দ ও বর্তমান যুবসমাজ
- ভূমিকা
- সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
- বর্তমান যুব সমাজের বিবেকানন্দের আদর্শ
- উপসংহার
ভূমিকা : পরাধীনতার নীর অন্ধকারে নিমজ্জিত আত্মবিস্মৃত জাতিকে যিনি ভারত সন্ধানে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তিনিই ভারত পথিক স্বামী বিবেকানন্দ। শতধা বিচ্ছিন্ন জাতিকে তিনি বৈদান্তিক মন্ত্রে দীক্ষিত করে এক জাত-পাতহীন সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনিই নরের মধ্যে নারায়ণকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন মুখ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, চন্ডাল ভারতবাসীকে নিজের ভাই বলে মনে করেছিলেন।
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি : উত্তর কলকাতার সিমলা পল্লির বিখ্যাত দত্ত পরিবারে ১৮৬৩ সালে জন্ম হয়। বিবেকানন্দের বাবা বিশ্বনাথ দত্ত, মা ভুবনেশ্বরী দেবী। মেট্রোপলিটন স্কুল ও জেনারেল এসেমব্লিজ কলেজের মেধাবী ছাত্র নরেন্দ্রনাথ (ডাক নাম বিলে) কীভাবে রাময়ের সংস্পর্শে বীর সন্ন্যাসী বিবেকানন্দের রূপান্তরিত হলেন তা পরম বিস্ময়ের ব্যাপার –
"বীর সন্ন্যাসী বিবেকের বাণী
ছুটিছে জগৎময়।
বাঙালির ছেলে ব্যাঘ্রে-বৃষভে
ঘটাবে সমন্বয়।”
সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষাগ্রহণ, হিমালয়ে সাধনা, পরিব্রাজক বুপে ভারত ভ্রমণ, অঞ্জ, দরিদ্র আত্মজ্ঞানহীন বহুধা বিচ্ছিন্ন ভারতবাসীকে অভয়' মন্ত্রে দীক্ষাদান আর, শিকাগাে ধর্ম সভায় অবিস্মরণীয় ভাষণ তাঁর ভারত সাধনার উজ্জ্বল দিক। আধ্যাত্মিকভাবে উদ্বুদ্ধ ও ত্যাগরতী মহাসন্ন্যাসী বিবেকানন্দের গঠনমূলক কাজের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন রামকৃ মঠ ও মিশন াপন এবং এই মিশনের মধ্য দিয়েই তার আদর্শ ও স্বপ্নের বুপায়ণ ঘটেছে।
Pic Source:Google |
বর্তমান যুব সমাজের বিবেকানন্দের আদর্শ : সুখ যে আত্মতৃপ্তিতে নেই, আছে আত্মব্যাপ্তিতে, একথা বর্তমান যুবসমাজ বিস্মৃত হয়েছে। দেশমাতৃকা যে মায়ের সমান তাকে ভালােবাসা যে প্রতিটি সন্তানের কর্তব্য কথা তারা আজ বিস্মৃত হয়েছে। ফলে তাৎক্ষণিক সুখের সম্ধানে আজ ব্যাপৃত। উদ্যমহীন, নিষ্ঠাহীন বোহেমিয়ান জীবন যাপনে তারা আজ মত। সাময়িক তুপ্তির নেশায় তারা আজ দিশাহারা। বিবেকানন্দ যে আদর্শের কথা উচ্চারণ করেছিলেন সে আদর্শ আজ অবহেলিত
“শুনহে মানুষ ভাই
সবার উপরে মানুষ সত্য।
তাহার উপরে নাই”
—এ কথায় আজকের যুবসমাজের বিশ্বাস নেই। আত্মতৃপ্তি তাদের উদ্দেশ্য। তাই পােশাক পরিচ্ছদ, গান-বিলাসেই তারা আজ মত্ত।
“বর্ণে বর্ণে নাহিক বিশেষ নিখিল ভুবন ব্রহ্মময়” মানুষে মানুষে যে ভেদাভেদ রয়েছে তা
কৃত্রিম তা মিথ্যা। একমাত্র সত্য মানুষে মানুষে সাম্য। 'কালাে আর ধলাে বাইরে কেবল ভিতরে সবাই সমান রাঙা এটাই হবে জাতপাতহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার মূলমন্ত্র। বিবেকানন্দের আদর্শকে সামনে রেখে বর্তমান যুবসমাজকে জাতপাতহীন সমাজ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে। স্বামী বিবেকানন্দ বৈদান্তিক জগৎ থেকে যে জাতপাতহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার বাণী বহন করে এনেছেন তা বাস্তবায়িত করতে হবে বর্তমান যুবসমাজকেই।
Pic Source:Google |
উপসংহার : সমাজবাদী, মানবপ্রেমিক বিবেকানন্দের বাণী আজ বহির্বিশ্বে অতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হচ্ছে। সত্যি কথা খলতে কী ভারতের যুবসমাজও এখন স্বামীজির অাশকে বাস্তবায়িত করতে পারেনি। তার আদর্শের পথে চলতে না পেরে ভারত আজ ঘাের দুর্বিপাকে পতিত হয়েছে। যদি তার বাণী যথার্থরূপে বাস্তবায়িত করে তাহলে চাৰি লাঙলের ফলা থেকে নতুন ভারতবর্ষ বেরিয়ে আসত। তার বাণীর মথার্থ অনুসরণে ভারতবর্ষের প্রতিটি মানুষ একই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আকধ হতে পারত। আজ ভারতবর্ষের মেলবন্ধন ফজি অর্পিত হয়েছে বর্তমান যুবসমাজের ওপর। ভারতকে জগৎসভায় প্রতিষ্ঠিত করতে জাতপাতহীন সমাজ সৃষ্টি করতে আজ ছাত্রসমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। বলতে হবে "বার্ণে বর্ণে নাহিক বিশেষ নিখিল ভূবন ব্রহ্মময়"।
0 Comments